মমতার হুঁশিয়ারি মতোই রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরে বড় রদবদল, বড় পদে ফিরলেন দময়ন্তী সেন
রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ঢেলে সাজানোর কথা আগেই জানিয়েছিলেন পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সেই কাজই শুরু হল। রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া আর রাজশেখরনকে। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ এডিজি আইজিপি ট্রেনিং পদে বদলি করা হয়েছে তাঁকে।
এছাড়াও রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি প্রক্রিয়া হয়েছে এদিন।
রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের একাংশের কাজে তিনি যে একেবারেই সন্তুষ্ট নন সে ব্যাপারে আগেই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিচুতলার পুলিশকর্মীদের কয়েকজন ও প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনের যোগসাজশে তাঁর সরকারকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। কয়লা, বালি পাচারের মতো কাণ্ডে পুলিশের নিচুতলার কয়েকজনের যোগ রয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর খাস কলকাতা শহরে তৃণমূল কাউন্সিলরকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করার চেষ্টা হয়। রাজ্যের রাজধানী কলকাতাতেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে যায়। বাইরের রাজ্য থেকে কীভাবে অবাধে বাংলায় বেআইনি অস্ত্র ঢুকছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। খোদ শাসকদলের কয়েকজন নেতাও পুলিশের একাংশের কাজে অনাস্থা প্রকাশ করেন।
ঠিক এই আবহে এবার রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনে খোলনলচে বদল শুরু মুখ্যমন্ত্রীর। রাজ্যের গোয়েন্দা প্রধানের পর থেকে আর রাজশেখরনকে সরিয়ে দিয়েছে নবান্ন। তাঁকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ এডিজি আইজিপি ট্রেনিং পদে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও এডিজি (পলিসি) পদে পাঠানো হয়েছে দময়ন্তী সেনকে। এর আগে তিনি এডিজি ট্রেনিং পদে ছিলেন। এডিজি (পলিসি) পদে থাকা আর শিবকুমারকে দেওয়া হয়েছে এডিজি (ইবি)-এর দায়িত্ব। এডিজি মর্ডানাইজেশন পদে আনা হয়েছে রাজীব মিশ্রকে। এর আগে এডিজি (ইবি)-এর দায়িত্ব ছিল তাঁরই কাঁধে।
কিন্তু এর পিছনেও রাজনৈতিক তত্ত্ব খাঁড়া করছেন বিরোধী দল। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুদার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করলেন, আর তুলে ধরলেন রাজনৈতিক তত্ত্ব। রাজ্য পুলিশের রদবদলের নির্দেশিকার পরই সুকান্ত লিখলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষ কয়েকটি সিদ্ধান্তে বোঝা যাচ্ছে, তৃণমূল অন্দরে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর পরিবর্তন হয়েছে।'
আর এই ইস্যুতে সুকান্ত মজুমদার বলেন, "প্রিন্স অফ ক্যামাকস্ট্রিটের প্রভাব পুলিশ ফোর্স এতদিন বিরোধীদের কন্ঠস্বর দাবিয়ে রাখত। প্রিন্সের ঘনিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিকের বদলি এটা বুঝিয়ে দিল মুখ্যমন্ত্রী এখন গোটাটাই একা হাতে নিয়ন্ত্রণ করবেন। প্রশাসন ও দল দুটোই।" সুকান্ত খোঁচা দিয়ে লিখলেন, "এরপরও বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের অন্তর্দ্বন্দ্ব আর কতটা প্রতীয়মান হবে?"
What's Your Reaction?