ধর্মঘটের দিন বিদ্যালয়ে না আসায় ন'জন মিডডে মিল রাঁধুনিকে কাজ হতে বসিয়ে দিল হুগলি (Hooghly) গার্লস স্কুল কর্তৃপক্ষ। কাজ হারিয়ে বিক্ষোভ করার জন্য করতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন ওই মহিলারা। সিচুয়েশন সামাল দিতে স্কুলে যায় পুলিশ। তাঁরা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের শিকার হয়ে গেছেন বলে দাবি।
৯ মার্চ ডিএ এর দাবিতে ধর্মঘট ছিল রাষ্ট্রীয় শ্রমিকদের (School sacks nine cooks on strike over DA's demands)। হুগলি গার্লস স্কুলের মিডডে মিলের রাঁধুনিরা অস্থায়ী। সামান্য ভাতায় কাজ করেন তাঁরা। সেই ধর্মঘটের দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা-সহ অন্য অনেকেই সেদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। তা সত্ত্বেও কেন ধর্মঘটের দিন বিদ্যালয়ে আসেননি তা নিয়ে শোকজ করা হয় নয় জন রাঁধুনিকে। তার জবাবও দেন তাঁরা।
সেই জবাবে খুশি না হয়ে এই ন'জনকে কাজ হতে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি (School sacks nine cooks)।
মঙ্গলবার তাঁরা কাজে এলে স্কুল হতে বের করে দেওয়া হয়। এরপরই বিদ্যালয়ের সম্মুখে বিক্ষোভ শুরু করেন রাঁধুনিরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ওই মহিলারা জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে রান্নার কাজ করছেন। একদিন বিদ্যালয়ে না আসায় তাদের কাজ হতে বসিয়ে দেওয়া হল। তৃণমূলের স্থানীয় কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাস ছিলেন স্কুলের সভাপতি। তাঁকে সরিয়ে বিধায়ক অসিত মজুমদার বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি করেন সঞ্জনা সরকারকে। ঝন্টু আর সঞ্জনার দ্বন্দ্বের শিকার হয়ে গেছেন মিডডে মিল রাঁধুনিরা, এমনই অভিযোগ।
অভিযোগ স্কুল সভাপতির সাথে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা চক্রান্ত করেছেন। মিডডে মিল রাঁধুনি জয়তি বিশ্বাস বলেন, 'ধর্মঘটের দিন বড়দি সহ অন্যান্য শিক্ষিকারাও বিদ্যালয়ে আসেনি। আর আমাদের কাজ চলে গেল। আমরা ঝন্টু বিশ্বাসের সঙ্গে থাকি এজন্য সভাপতি আমাদের সাথে এইরকম করল।'
যদিও সঞ্জনা রাষ্ট্রের দাবি এটা বিদ্যালয় কমিটির সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, 'রাঁধুনিদের বিরুদ্ধে আহার সরানোর অভিযোগ আছে। আবার ধর্মঘটের দিন তারা কতিপয় না বলে বিদ্যালয়ে আসেননি। সেদিন যে বাইশটা ছোট্ট শিশু স্কুলে এসেছিল তাদের খাবার ক্রয় করে দেওয়ার জন্য হয়েছে।'
স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা গার্গী বন্ধু বলেন, 'কাজ হতে ওঁদের বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমার একার নয়। বিদ্যালয় পরিচালন পরিচালক সভা এই ডিসিশন নিয়েছে।' ধর্মঘটের দিন উনি নিজেও অনুপস্থিত ছিলেন বলেও করেন। তবে হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাস বলেন, 'এটা একটা অমানবিক এবং স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। আমার রাজনৈতিক জীবনে এরকমটা দেখিনি। বাম আমল হতে এই দৈন্য দরিদ্র মহিলারা একটা সাম্মানিক ভাতায় রাঁধুনির কাজ করতেন। হঠাত্ করে তাদের এইভাবে কাছ হতে বসিয়ে দেওয়া হল। একবার চাওয়া হল না, কী করে ওদের সংসার চলবে।'