নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে ফের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে ইডি। বুধবার সকাল বেলা থেকে তা নিয়ে চাপানউতোর চলছে। তৃণমূলের দাবি, এটি নিতান্তই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এরই মধ্যে এদিন প্রভাতে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স হতে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তখন সাংবাদিকরা তাঁকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডি-র তলবের ব্যাপারে প্রশ্ন করতেই জ্যোতিপ্রিয় বলেন, 'কোন বন্দ্যোপাধ্যায়?' ফের সেইম প্রশ্ন করাতে জ্যোতিপ্রিয় ফের বলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে? আমাদের নেতা?'
কদিন আগে এই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই ডাক্তারখানায় যাওয়ার টাইমে বলেছিলেন, 'মমতাদি সব জানেন, অভিষেক সব জানেন, আমি নির্দোষ।' জ্যোতিপ্রিয় সেকথা বলার পর সন্ধ্যায় যারপরনাই উন্মত্ত হয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন দলের সাংসদ তথা আইনজীবী সাহায্য বন্দ্যোপাধ্যায়। হিতকর বলেছিলেন, 'মমতাদি রেশন অ্যারেঞ্জমেন্টে বিশুদ্ধতা আনতে চেয়েছিলেন। তিনি মন্ত্রীদের উপর ভরসা করেছিলেন। কিন্তু কেউ অকাজ করে থাকলে তার দায় দিদির নয়।'
কল্যাণ দলের সম্মতি নিয়েই সেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর সেই প্রতিক্রিয়ার পরই জ্যোতিপ্রিয় অভিষেকের ব্যাপারে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন কিনা সে বিষয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
এমনিতে জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে ঘটনাপ্রবাহর সাথে অভিষেকের আপাত কোনও সম্পর্ক নেই। বরং জ্যোতিপ্রিয়র বিপক্ষে যে ধরনের কমপ্লেইন উঠছে সেই সব প্রশ্নই অধিকতর প্রাসঙ্গিক। বিশেষ করে তাঁর ভদ্র মহিলা ও স্ত্রীর ব্যাঙ্ক আইডিতে নগদে কীভাবে প্রায় ১০ কোটি টাকা জমা পড়ল সেই প্রশ্ন অনেক বহু জরুরি। এদিন সেই সব প্রশ্নও কমবেশি বালুকে করা হয়। উত্তরে বন মন্ত্রী দাবি করেন, উনি নির্দোষ। ১৩ তারিখ ওনাকে ব্যাঙ্কশাল উকিল পেশ করা হলে ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী। সেই সাথে ফের বলেছেন, "আমি টিমের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব'।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার জন্য গিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'উনি টিমের সঙ্গে ছিলেন বা থাকবেন কিনা সেটা তাঁর ব্যাপার। আসল বিষয় হল, দল তাঁর সাথে কয়দিন থাকবে? খাবার মন্ত্রী হতে তাঁকে বনমন্ত্রী করা হয়ে গিয়ে ছিল কেন সেই ব্যাখ্যাও তো শুনতে চাইছে মানুষ।'
সোমবার রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের মন্ত্রীকে ফের সাত দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত। আপাতত ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে তাঁকে। আদালত প্রাঙ্গণ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বালু হাত নেড়ে সেদিন বলেছিলেন, ''সাত দিন পর আবার আসছি। সাত দিন, সাত দিন।''