কোহলি-রোহিতকে ছাড়াই জয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে ২০০ রানে হারিয়ে সিরিজ় হার্দিক #HardikPandya
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে সিরিজ় নির্ণায়ক ৩য় এক দিনের ম্যাচেও পরীক্ষা নিরীক্ষার পথ থেকে সরল না ভারতীয় শিবির। বিশ্বকাপের আগে জুনিয়রদের চান্স দিতে মঙ্গলবারও মাঠে নামলেন না রোহিত শর্মা তার সাথে বিরাট কোহলি। তবু সাই হোপের দলকে ২০০ রানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ় জিতলেন হার্দিক পাণ্ড্যরা।
কলকাতা: টস বিজয় লাভ করে প্রথমে ফিল্ডিং করার ডিসিশন নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ় অধিনায়ক। হোপের আশায় জল ঢেলে ইন্ডিয়া তুলল ৫ উইকেটে ৩৫১ রান। সব ভারতীয় ব্যাটারই রান তুললেন ব্রায়ান লারার ঘরের মাঠে। ঈশান কিশন এবং শুভমন গিল ওপেনিং জুটিতে তুললেন ১৪৩ রান। ঈশানের ব্যাট থেকে এল ৬৪ বলে ৭৭ রানের আগ্রাসী ইনিংস। আটটি চার তার সাথে তিনটি ছক্কা এল তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের ব্যাট থেকে। সিরিজ়ে তিনটি ম্যাচেই অর্ধশতরান করলেন ঈশান। শতরান পেলেন না শুভমন। উনি ৯২ বলে ৮৫ রান করে সাজঘরে ফিরলেন। ১১টি চার দিয়ে নিজের ইনিংসটি সাজালেন তিনি। শুভমন মূলত এ দিন উইকেটের একটি প্রান্ত আগলে রাখার কাজ করেছেন। অবশিষ্ট ব্যাটারেরা চালিয়ে খেলেছেন অন্য প্রান্তে। তিন নম্বরে নেমে রুতুরাজ গায়কোয়াড় (৮) অবশ্য রান পেলেন না। চার নম্বরে নেমে সঞ্জু স্যামসন করলেন ৪১ বলে ৫১ রান। দু'টি চার এবং চারটি ছক্কা মারলেন তিনি। এ দিনও ভারতকে নেতৃত্ব দিলেন হার্দিক। ১ম দু'ম্যাচে ব্যর্থতার পর ত্রিনিদাদের ২২ গজে রান এল হার্দিকের ব্যাটে। ৫২ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত থাকলেন বহুদর্শী অলরাউন্ডার। চারটি চার তার সাথে পাঁচটি ছক্কা মারলেন হার্দিক। সূর্যকুমার যাদবও দ্রুত রান তুললেন ছয় নম্বরে নেমে। তাঁর ৩০ বলে ৩৫ রানের ইনিংসে আছে দু'টি করে চার এবং ছয়। সমাপ্ত পর্যন্ত হার্দিকের সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা (অপরাজিত ৮)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের কোনও বোলারই এ দিন ইন্ডিয়ান ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারেননি। সকলের বলই সহজে খেলেছেন ভারতীয়রা। আয়োজকদের সফলতম বোলার রোমারিয়ো শেফার্ড। ৭৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন আলজ়ারি জোসেফ, গুড়াকেশ মোতি এবং ইয়ানিক কারিয়া।
জয়ের জন্য ৩৫২ রান করতে নেমে চালু থেকেই রেগুলার ব্যবধানে উইকেট হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। ২০০৬ বছরের পর ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে ১ম বার এক দিনের সিরিজ় বিজয়ের হোপদের প্রার্থনা সাত ওভারের মধ্যেই সমাপ্ত করে দিলেন মুকেশ কুমার। বাংলার জোরে বোলার পর পর ফিরিয়ে দিলেন ব্র্যান্ডন কিং (শূন্য), কাইল মেয়ার্স (৪) এবং হোপকে (৫)। মুকেশের দাপুটে বোলিংয়ে ১৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ইনিংসের শুরুতেই কোণঠাসা হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। সমাপ্ত পর্যন্ত সেই চাপ আর সামলাতে পারেনি আয়োজকেরা। রেগুলার ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ এবং সিরিজ় হারলেন তাঁরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের কোনও ব্যাটারই কামরার মাঠের ২২ গজে দাঁড়াতে পারলেন না। ব্যতিক্রম কেবলমাত্র অ্যালিক আথানাজ়ে। তিন নম্বরে নেমে তিনি কিছুটা লড়াই করার ট্রাই করলেন। অথচ কোনও সতীর্থের সহায়তা পেলেন না। কুলদীপ যাদবের বলে আউট হওয়ার প্রথমে উনি তিনটি চারের মাধ্যমে ৫০ বলে করলেন ৩২ রান। তাতে অবশ্য লাভ কিছু হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের। কেসি কার্টি (৬), শিমরন হেটমেয়ার (৪), শেফার্ডেরা (৮) উইকেটে এলেন যেন নিয়মরক্ষা করতে। গাঢ় প্রবল উইকেট হারানোয় রান তোলার গতি কখনই প্রত্যাশা মতো বৃদ্ধি করার জন্য পারলেন না ক্যারিবিয়ানেরা। ফলে ওভার প্রতি রান তোলার টার্গেট বাড়ল লাফিয়ে লাফিয়ে। মুকেশের পর জয়দেব উনাদকাট তার সাথে শার্দূল ঠাকুরও ক্লান্তিহীন বিব্রত করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটারদের। বল সুইং করিয়ে। আবার কক্ষনো গতির হেরফের করে। আবার কুলদীপ যাদব, রবীন্দ্র জাডেজার ঘূর্ণনের সামনেও একাকী দেখিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ব্যাটারদের। তার মধ্যেও কিছুটা ট্রাই করলেন কারিয়া (১৯), জোসেফরা (২৬), মোতি ( অপরাজিত ৩৮)। নবম উইকেটের জুটিতে মোতি এবং জোসেফ যোগ করলেন ৫৫ রান। জুটি কিছুটা হলেও মান রাখল আয়োজকদের। সম্পন্ন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ইনিংস সমাপ্ত হল ১৫১ রানে। দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের ক্রিকেটারদের ভিতরে যে লড়াকু ক্রিকেট নোটিশ গিয়েছিল, এ দিন তার ধারে নিকট যেতে পারলেন না তাঁরা।
শেষ পর্যন্ত মুকেশ ৩ উইকেট নিলেন ৩০ রান খরচা করে। ইন্ডিয়ার সফলতম বোলার অবশ্য শার্দূল। তিনি ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন। ১৬ রানে ১ উইকেট উদানকাটের। ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট কুলদীপ যাদবের। ১ম একাদশে না থাকলেও কিছুক্ষণের জন্য ফিল্ডিং করতে নামেন কোহলি।
What's Your Reaction?